মোঃ হাসমত আলী বাবু
সিরাজগঞ্জ জেলা, প্রতিনিধি,:
সিরাজগঞ্জের, এনায়েতপুর থানা,গত ৪ আগস্ট সরকারি চাকরির জন্য কোঠা সংস্কার দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে , থানায় হামলা, ভাঙ্গচুর অগ্নিসংযোগ সহ ১৩ পুলিশ সদস্য কে হত্যার ঘটনায় থানার উপপরিদর্শক ( এসে আই) আব্দুল মালেক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন,
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা এক আসামি কে এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহাম্মদ মোস্তফা খান বাচ্চু সেই আসামি কে ছেড়ে দেবার দাবি করেন। পুলিশ ঐ দাবি মেনে নেয় নি, তার অবৈধ দাবি মেনে না নেয়ায় পুলিশের উপর তার খোব ছিল।পরে ঐ আসামির বিরুদ্ধে মামলা ও নেয়নি পুলিশ। পরে বাচ্চুর নেতৃত্বে ৪০০-৫০০ জন অজ্ঞাত দুস্কৃতিকারী থানা ঘেরাও করে। সেই সময় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক কে অপসারণের দাবি ও করেছিল।পরে আসামিরা এনায়েতপুর থানার পুলিশ এর খতি করার সুযোগ খোঁজতে থাকে।গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা এনায়েতপুর থানার সামনে বিক্ষোভ করে, এসময় ওসি আব্দুর রাজ্জাক হ্যান্ড মাইক দিয়ে বিক্ষোভ কারি দের উদ্দেশ্য বক্তব্য দেন।
ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন,এই থানা সাধারণ জনগনের। আপনারা থানার কোন খয়খতি করবেন না।এ কথায় ছাত্র জনতা চলে যায়।পরে ১ নং আসামি আহাম্মদ মোস্তফা খান বাচ্চুর নেতৃত্বে এজাহার নামীয় আসামি সহ ৫ থেকে ৬ হাজার দুস্কৃতিকারী দেশী অস্ত্র নিয়ে থানায় হামলা চালায়। আত্মরক্ষায় পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে। আসামিরা পুলিশের কোয়ার্টার ও ওসির বাসভবনে আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুন দেখে পুলিশ সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে । আসামিরা থানা কম্পান্ডে উপ- পরিদর্শক (এসে আই) তুহিনুজ্জামান, সহকারী উপ- পরিদর্শক (এএসআই) ওবায়দুর রহমান, কনেস্টেবল আরিফুল আযম, রবিউল আলম শাহ, হাফিজুল ইসলাম, শাহিন, রিয়াজুল ইসলাম কে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে।এক পর্যায়ে আসামিরা থানা ধ্বংস ও জীবিত পুলিশ সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে ভেতরে ঢুকে যায়। পুলিশ ও জনসাধারণের জমা দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে থানার ভেতর ও বাহিরে থাকা অফিসার ও ফোর্স কে এলো পাথারি গুলি করে। এসময় থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক,এস আই আনিসুর রহমান,এস আই রোইজ উদ্দিন খান ,এস আই প্রনবেশ কুমার বিশ্বাস, কনেস্টেবল আব্দুল খালেক, কনেস্টেবল হানিফ থানার পাশে বাবু মিঞার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। আসামিরা তাদের উপস্থিত টের পেয়ে যায়। সেখানে গিয়ে তাদের কে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে । এসময় নারী কনেস্টেবল, পারভিন কে মারধর করে টানা হেচরা করে শ্লীলতাহানি করে। পরবর্তীতে বিকেলে সেনাবাহিনীর একটি দল এসে পৌঁছে নিহত পুলিশ সদস্যদের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠান।
আসামিরা ৫ টি পিস্তল ও আটটি ম্যাগজিন, একটি চায়না পিস্তল ও ২ ম্যাগজিন,৪ টি চায়না রাইফেল ও ৩৭ টি চার্জার,২ টি চায়না রাইফেল টাইপ ও ২ টি ম্যাগজিন,৬ টি ১২ বোর শর্ট গান, একটি ৩৮ মিমি গ্যাসগান,লন্ঞার,৭.৬২/৩৯ মিমি গুলি ১৬৮ রাউন্ড,৭.৬২/২৬ মিমি গুলি ১৬ রাউন্ড,৯/১৯ মিমি গুলি ৬০ রাউন্ড,১২ রোব শর্ট গান (রাবার কার্তুজ) ২২৭ রাউন্ড,১২ রোব শর্ট গান (লেটবল কার্তুজ) ৩৫৯ রাউন্ড, ল্ঙ রেঞ্জ গ্যাস শেল ৩৮ রাউন্ড,শর্ট রেঞ্জ গ্যাস শেল ৩৬ রাউন্ড লুটপাট করে নিয়ে যায়।
এছাড়া আসামিরা একটি ডাবল কেবিন ও একটি সিঙ্গেল কেবিন পিকাপ ভ্যান, পুলিশ সদস্য দের ১৫ টি মটর সাইকেল,ও একটি ট্রাক, বিভিন্ন সময়ে আটক করা নতুন পুরাতন ১২ টি মটর সাইকেল, ও থানার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি, আসবা পত্র , কম্পিউটার, ওয়াকিটকি পুরিয়ে দেয়। এতে এনায়েতপুর থানায় ৪ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ২৭ শে আগস্ট, সকালে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রোববার ২৫ শে আগস্ট, রাতে এনায়েতপুর থানার উপ-পরিদর্শক এস আই, আব্দুল মালেক বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত নামা ৬ হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা টি দায়ের করেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এনায়েতপুর থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ সহ ১৩ পুলিশ হত্যা মামলায় থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহাম্মদ মোস্তফা খান বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বি এস সি, শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মুল্লুক চাঁন, বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গা বাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার নাম উল্লেখ সহ অঙ্গাত পাঁচ থেকে ছয় হাজার জনকে আসামি করা হয়েছ