মোঃ আঃ কুদ্দুস খান, বিশেষ প্রতিনিধি, মঠবাড়ীয়া (পিরোজপুর)
পিরোজপুরের মঠবাড়ীয়া উপজেলার বেসরকারি সংস্থা ‘এসডিএফ’-এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুলের বিরুদ্ধে আকাশছোঁয়া দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তুষখালী, মাছুয়া ও আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নে জেলেদের মাঝে ঋণ, ট্রলার ও আর্থিক সহায়তা বিতরণের দায়িত্বে রয়েছেন সাইফুল। এ সুযোগে তিনি জেলেদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি মাঝে মধ্যেই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার পরিচয়ে মৎস্য অফিসে গিয়ে কর্মচারীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আধিপত্য বিস্তার করেন। তুষখালীর জানখালী গ্রামের জেলে ছগীর তালুকদার অভিযোগ করেন, সাইফুল ঋণ বিতরণের সময় ঘুষ ছাড়া কাউকে ঋণ প্রদান করেন না। এছাড়া ২০২৫ সালের ইলিশ মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা চলাকালে মেরিন অফিসার প্রদীপ বাবু ও স্থানীয় জাহাঙ্গীর পেসকারের যোগসাজশে কয়েকজন অসাধু জেলেকে উৎসাহিত করে নদীতে জাল ফেলে ইলিশ ধরান এবং সেসব মাছ জাহাঙ্গীর পেসকারের ফ্রিজে রেখে পরবর্তীতে বাড়িতে নিয়ে যান বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বছরও একইভাবে তিনি মৎস্য কর্মকর্তার পরিচয়ে ওইসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। মাছুয়া ইউনিয়নের তাজেনুর মেম্বরও এসব কাজে তার সহযোগী হিসেবে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। ছগীর তালুকদার আরও জানান, ‘দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প’-এর আওতায় জেলেদের মাঝে গরু ও ছাগল বিতরণের তালিকা করার দায়িত্ব প্রকল্পে নিয়োজিত কর্মচারীদের হলেও বাস্তবে এসডিএফ কর্মকর্তারা অযোগ্য ব্যক্তিদের নাম তালিকাভুক্ত করে বিতরণ করেন। মঠবাড়ীয়ার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী তুষখালী, মাছুয়া, বেতমোর, আমড়াগাছিয়া ও সাপলেজা ইউনিয়ন প্রকৃত মৎস্যনির্ভর এলাকা। অথচ এসব ইউনিয়নের প্রকৃত জেলেরা বঞ্চিত হচ্ছেন—আর নদী ও জেলেশূন্য ইউনিয়নগুলোতে নামমাত্র জেলে বানিয়ে সুবিধা বিতরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পে নিয়োজিত কর্মচারী আসাদ ও মেহেদী জানান, “আমাদের প্রত্যেকে তিনটি করে নাম জমা দিলেও বাকি নামগুলো কে বা কারা দিয়েছে, আমরা জানি না।”অভিযোগ প্রসঙ্গে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মেজাম্মেল হক বলেন, “বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।”এ নিয়ে সচেতন মহল বলছে—একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার পরিচয়ে অফিসে গিয়ে কর্মচারীদের হুমকি দেওয়া, নিষেধাজ্ঞাকালীন নদীতে মাছ ধরা এবং জেলেদের আর্থিক সহায়তা আত্মসাৎ করা—সবই গুরুতর অপরাধ। তারা বিষয়টির প্রতি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।