শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:২৯ অপরাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি;
পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর উপজেলার ২নং পত্তাশী ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান মো. শাহীন হাওলাদারকে অপহরণের চেষ্টা ও সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে জাকারিয়া মুন্সী গ্যাংয়ের শাস্তির দাবিতে উত্তাল প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত ০৪ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে ইউনিয়ন পরিষদের কাজ শেষে খুলনা যাওয়ার পথে চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারের গাড়িকে পিরোজপুর পুরানস্ট্যান্ড বড় ব্রীজ এলাকায় পথরোধ করে জাকারিয়া মুন্সী ও তার সহযোগীরা। মোটরসাইকেল আড়াআড়ি দাঁড় করিয়ে তারা গাড়ির দরজা খুলে চেয়ারম্যানকে টেনে-হিঁচড়ে নামিয়ে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় তাদের হাতে থাকা চেয়ারম্যানের ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহৃত দুটি আইফোন ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা, ফলে তিনি কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতেও পারেননি।
ধস্তাধস্তি ও চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। স্থানীয়দের কল পেয়ে ৯৯৯ এর বরাতে পিরোজপুর সদর থানার টহল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। খবর ছড়িয়ে পড়লে পত্তাশী ইউনিয়নসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তিন শতাধিক লোকজন ও শতাধিক মোটরসাইকেল থানায় জড়ো হয়। এসময় পিরোজপুর ১ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মাসুদ সাঈদী, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. জহিরুল হক, সহকারী সেক্রেটারি মো. আব্দুর রাজ্জাকসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ থানায় উপস্থিত হন। পরে পিরোজপুর–২ আসনের মনোনীত প্রার্থী, আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জননেতা শামীম সাঈদী উপস্থিত হন।
সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ জনাব শামীমের উপস্থিতিতে জাকারিয়া মুন্সীকে কড়া সতর্কবার্তা প্রদান ও মুচলেকা গ্রহণের পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার জানান, জাকারিয়া মুন্সী দীর্ঘদিন ধরে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছিল। চাঁদা দিতে না চাওয়ায় আগেও ঢাকার শাজাহানপুরে আয়োজিত এক ইফতার অনুষ্ঠানে তাকে অপহরণের চেষ্টা করে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, জাকারিয়া মুন্সী বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, সরকারি-বেসরকারি ব্যক্তিদের সঙ্গে তোলা ছবি ফেসবুকে প্রচার করে প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি, তদবির ব্যবসা ও টেন্ডারবাজি করে আসছে।
প্রতিবাদ সমাবেশ
চাঁদাবাজি ও অপহরণচেষ্টার প্রতিবাদে বুধবার বিকেল ৪টায় পত্তাশী বাজারে ইউনিয়নের ৫০০ জনের উপস্থিতিতে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন—
জনাব রুহুল আমিন শেখ, সভাপতি, বাজার কমিটি (মেম্বার)
ডা. মো. ইউনুস আলী (মেম্বার)
আলহাজ্ব সোহরাব হোসেন (মেম্বার)
হুমায়ুন কবীর, সাবেক সভাপতি, স্বেচ্ছাসেবক দল
মহারাজ শেখ, সভাপতি, যুবদল ইউনিয়ন
আলহাজ্ব মো. রফিক আহমেদ, সভাপতি, শ্রমিকদল
মেম্বার হেমায়েতুল ইসলামসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ
বক্তারা বলেন, “জাকারিয়া মুন্সী কোথায় থাকে, কি তার পরিচয়— কেউ জানে না। হঠাৎ করে সে এলাকায় এসে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি শুরু করেছে। তাকে যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে, জনগণ তাদেরও প্রত্যাখ্যান করবে।”
বক্তারা অবিলম্বে জাকারিয়া মুন্সীকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।