মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৫:১২ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
Welcome To Our Website...
সংবাদ শিরোনাম :
বেলকুচিতে নদী ভাঙ্গন প্রকল্পে দুর্নীতি অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন; মোংলায় ভিটিআরটি ও বাঘবন্ধু দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ; আত্রাইয়ে কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা; পিরোজপুরে গণমাধ্যমের অপ-সাংবাদিকতা প্রতিরোধ এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা; মোংলা বন্দর ইস্টিভিডরস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদককে সংবর্ধনা; “বাইক” পিরোজপুরে ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত; নওগাঁয় একটি পরিবারের দাপটে পুরো গ্রামের মানুষ অতিষ্ট  ; নওগাঁতে ইসলামিক ফাউণ্ডেশন এর শিক্ষক,শিক্ষিকা,জিসি,এমসি,সুপারভাইজার দের মানববন্ধন ; কোস্টগার্ড’র অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা; তারুণ্যের সমাবেশ সফল করতে মোংলায় যুবদলের প্রচার মিছিল; নেছারাবাদে নবীকে নিয়ে ফেইসবুকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় হিন্দু যুবককে আটক; এনায়েতপুরে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে শিক্ষা বৈঠক অনুষ্ঠিত ; স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ; নওগাঁতে কালভার্ট ভেঙে চার গ্রামের মানুষের ভোগান্তি ; নেছারাবাদে “ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে” প্রতিবাদ মিছিল; নওগাঁর বদলগাছীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির কার্যক্রম শুরু হয়েছে; ফরিদপুরে যুবলীগ নেতা গ্রেফতার; মোংলা বন্দরে আগমন বেড়েছে বাণিজ্যিক জাহাজের, গাড়ি আমদানিতে রেকর্ড; প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ;

নওগাঁর রাণীনগরের পাতি: উত্তরাঞ্চলের কৃষকদের ‘অসময়ের বন্ধু’;

মোঃ ফিরোজ আহমেদ
নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ

নওগাঁর রাণীনগরে চলতি রবিশস্য মৌসুমে ধান, গম, সরিষা, ভুট্টা, বাদাম সহ অন্যান্য শাক-সবজির পাশাপাশি দিনদিন চাষিরা পাতি চাষের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। জৈষ্ঠ্য মাসের আগে এই এলাকার চাষিদের ঘরে সংসারের প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে তেমন কোন বিক্রয় যোগ্য ফসল ঘরে না থাকায় প্রান্তিক কৃষক সহ সাধারণ মানুষ কিছুটা অভাবে এই সময়টা পার করে। কিন্তু অসময়ের বন্ধু হিসেবে খ্যাত অধিকাংশ কৃষকদের ঘরে এখন পাতি কাটা ও শুকানোর কাজ শুরু হয়েছে। বাজার মূল্য ভাল ও ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে পাতি চাষি কৃষকরা বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে তেমন কোন ক্ষতি না হওয়ায় এবং স্বল্প পরিমাণ বালাই নাশক প্রয়োগে, সার্বিক উৎপাদন ব্যয় কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় ইরি-বোরো ধান চাষের আগ্রহ কিছুটা কমিয়ে বনপাতি ও জলপাতি চাষে কৃষকরা মনোযোগ দিচ্ছে। এক সময় এই জনপদে পাতি চাষ তেমন না হলেও পাতি দিয়ে তৈরি পরিবেশ বান্ধব মাদুরের প্রধান উপকরণ হিসেবে কদর বেশি থাকায় চলতি মৌসুমে অন্যান্য ফসলের সাথে রেকর্ড পরিমাণ পাতি চাষ করেছে এই উপজেলার কৃষকরা। ইতিমধ্যেই মাঠ পর্যায়ে পাতি ভাল হওয়ায় কৃষকরা কাটা শুকানো শুরু করাই ভাল দামে বাজারে পুরোদমে বিক্রয় হচ্ছে। সরকার পর্যায় থেকে কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন ফসল চাষের জন্য কৃষি উপকরণ, বীজ, রাসায়নিক সার বিনা মূল্যে বিতরণ করা হলেও পাতি চাষের জন্য প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কোন প্রকার সহযোগীতা প্রদান করা হয় না। চলতি রবিশস্য মৌসুমে কোন প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগ হানা না দেওয়ায় পাতি চাষের পরিবেশ অনুকূলে থাকায় পাতির ভাল ফলন হচ্ছে বলে চাষিরা জানান। ইতিমধ্যেই মাঠ পর্যায়ে কৃষকরা নিজ নিজ জমিতে প্রথম পর্যায়ের কাটার কাজ প্রায় শেষ। এই ফসলটি একই জমিতে প্রায় তিন বার কাটা যায়। গ্রামীণ জনপদের কৃষকরা এই পাতি চৈত্র মাস থেকে বৈশাখ মাস অবদি কাটা শুকানোর কাজ চলতে থাকে। মাদুর তৈরির উপযোগী করতে ভাল রোদ থাকলে প্রায় দুই দিন সময় লাগে তা শুকাতে। এরপর কিছু কৃষক সাংসারিক প্রয়োজনে বাজার জাত করলেও বেশি লাভের আশায় অধিকাংশ কৃষক গুদাম জাত করে রাখে। দাম বেশি হলে সুযোগ বুঝে তারা অবসর সময়ে পরিবারের সবাই মিলে মাদুর তৈরি করে বেশি দামে বাজারে বিক্রয় করে। এর সুবাদেই রাণীনগরের পাতি দেশ জুড়ে খ্যাতি। জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নে প্রায় ৮০ হেক্টর জমিতে বনপাতি ও জলপাতি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চলতি বছরে উপজেলায় লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাতির আবাদ হয়েছে। শুরুতেই ভাল আবহাওয়া অনুকূলে থাকা এবং পাতির ক্ষেতে রোগ-বালাই না থাকায় ও মাঠ পর্যায়ে পাতি চাষিদের উপ-সহকারি কৃষি অফিসাররা যথা সময়ে উপযুক্ত পরামর্শ নজরদারি ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে পাতি ক্ষেত অনেকটা ভাল হয়েছে। তবে মিরাট, গোনা, কাশিমপুর, রাণীনগর সদর, কালীগ্রাম ও পারইল ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পাতি চাষ হয়েছে। পাতি কাটার মৌসুমে রোদ ভাল থাকলে মানসম্পূর্ণ ভাবে শুকাতে পারলে প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৭০ হাজার টাকার পাতি বিক্রয় হবে। উপজেলার পারইল ইউনিয়নের বোদলা গ্রামের পাতি চাষি হেলাল মন্ডল জানান, আমি প্রতি বছরই ধানের পাশাপাশি পাতি চাষ করি। চৈত্র মাস থেকে শুরু করে ইরি ধান ঘরে তুলার আগ মূহুর্ত পর্যন্ত পাতি বিক্রয় করে আমার সংসারের প্রয়োজনীয় সমস্যা গুলো সমাধান করি। চলতি মৌসুমে এক বিঘাতে পাতি চাষ করেছি। ইতিমধ্যেই প্রথম কাটা শেষ করে পাতিগুলো রোদে শুকানোর কাজ চলছে। আবহাওয়া ভাল থাকায় জমিতে পাতি ভাল হয়েছে। আশা করছি সমদয় খরচ বাদ দিয়ে প্রায় প্রায় ৩০ হাজার টাকা লাভের আশা করছি। উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪/৫ টি ইউনিয়নে বিগত বছরের তুলনায় লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমান পাতি চাষ হয়েছে। কুটির শিল্পের মাদুর তৈরির প্রধান উপকরণ পাতি। পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় লাভ বেশি হওয়ার কারণে কৃষকরা অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি পাতি চাষ করেছে। তবে প্লাস্টিকের সামগ্রী বাজারে বেশি হওয়ার কারণে পরিবেশ বান্ধব পাতির তৈরি মাদুর বিপণন কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

Copyright © Frilix Group
প্রযুক্তি সহায়তায় মাল্টিকেয়ার